দখিনের খবর ডেস্ক ॥ দণ্ড থেকে মুক্তিই করোনা আক্রান্ত বিএনপির চেয়ারপারসনের চিকিৎসা বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।চিকিৎসার কথা বিবেচনায় বিএনপি নেত্রীকে মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। শুক্রবার ধানমন্ডিতে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালের সামনে গরিবদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসা হচ্ছে না। তার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। ওনার চিকিৎসা হলো মুক্তি। মুক্তি দিলে উনি কোথায় চিকিৎসা করবে সেটা ওনার স্বাধীনতা। খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে সময়োপযোগী চিকিৎসা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের অতীতের প্রতিহিংসা, ভুল স্মরণ না রেখে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিতে হবে। মানসিক শক্তি না থাকলে সুস্থ হওয়া যায় না। সেই জন্য আমি আহ্বান করছি, ছাত্রদের পাশাপাশি খালেদা জিয়াকেও মুক্তি দেওয়া হোক। ওনার কিছু হয়ে গেলে পরে আক্ষেপ করতে হবে। ৭৫ বছ বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তাকে কারাগারে যেতে হয়। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু পর পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত বছরের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে তাকে ছয় মাসের জন্য সাময়িক মুক্তি দেয়। পরে আরও দুই দফায় মেয়াদ বাড়ানো হয়। মুক্তি পাওয়ার পর খালেদা জিয়া গুলশানে ভাড়া বাসা ফিরোজায় থেকে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। তার সঙ্গে বাইরের কারও যোগাযোগ সীমিত। এরমধ্যেই গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনা শনাক্ত হয়। এরপর থেকে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজায়’ তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এফএম সিদ্দিকীর নেতৃত্বে চিকিৎসা শুরু হয়। করোনা আক্রান্তের ১৪ দিন অতিক্রান্ত হওয়ার পর খালেদা জিয়ার করোনা টেস্ট করা হলে ফলাফল আবারও পজিটিভ আসে। এরপর কিছু পরীক্ষার জন্য তাকে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রথম দফায় পরীক্ষা করে বাসায় ফেরার পর দ্বিতীয় দফায় ২৭ এপ্রিল তাকে ফের হাসপাতালে নেওয়া হয়। সোমবার ভোরের দিকে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় খালেদা জিয়াকে সিসিইউতে (করোনারি কেয়ার ইউনিট) স্থানান্তর করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি সেখানেই আছেন। এদিকে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের করোনার কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তার ফুসফুস থেকে তরল জাতীয় পদার্থ (ফ্লুইড) অপসারণ করা হয়েছে। তার ডায়াবেটিস পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে থাকছে না। এর মাত্রা ওঠানামা করছে। এছাড়া অক্সিজেনের মাত্রাও কিছুটা কমেছে। ‘ফিরোজা’র বাসায় বিএনপি চেয়ারপারসন ছাড়াও আরও ৮ জন করোনায় আক্রান্ত হন। তবে ফিরোজার সব স্টাফরা ইতোমধ্যে করোনামুক্ত হয়েছেন।
Leave a Reply